ক্রিকেট বিশ্বের যেই প্রান্তেই ভারত-পাকিস্তান লড়াই হোক না কেন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে ম্যাচটি। কে জিতবে এবং কে হার মানবে এই নিয়ে চলে আলোচনা,সমালোচনা তর্ক ও বিতর্ক। ঢাকায় অনুষ্ঠানরত এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে ভারত-পাকিস্তান লড়াই হবে। এই খবর অনেক আগে থেকেই জানতেন ক্রিকেট রোমান্টিকরা। কাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত লড়াই দেখতে হাজির বিশ হাজারেরও বেশি সমর্থক। প্রিয় দলের পতাকা ও ফেস্টুন বগলদাবা করে স্টেডিয়ামে এসে জানান দিলেন কোন দলের সমর্থক তিনি। শুধু তাই নয়, প্রিয় দলের খেলোয়াড়দের উত্সাহও দিয়ে গেলেন। বাংলাদেশ যেহেতু পক্ষ ও বিপক্ষে নেই তাই ভারত-পাকিস্তান চিত্কারে ধ্বনিত হল মিরপুর!
উইকেটরক্ষক উমর আকমল
পাকিস্তান টিম ম্যানেজম্যান্ট গতকাল ভারতের ম্যাচে উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদকে বসিয়ে উমর আকমলকে গ্লাভস তুলে দেয়। পেস আক্রমণকে ধারালো করতেই উমর গুল , আইজাজ চিমার পাশে ওয়াহাব রিয়াজকে নিয়ে আসা হয়। তিন বিশেষজ্ঞ পেসার নিয়ে মাঠে নামে পাকিস্তান। উমর আকমল ছয় ইনিংসে ৬টি ক্যাচ ও দুটি স্টাম্পিং করেছেন।
জামশেদের ক্যাচ ফেলে দেন শচীন
পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি মোহাম্মদ হাফিজ ও নাসির জামশেদ ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন। দারুণ খেলছিলেন এ দুইজন। ভারতীয় বোলাররা উইকেট নিতে ব্যর্থ। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি শচিন টেন্ডুলকারের হাতে বল তুলে দিলেন। ২৪তম ওভারে শচীন আট রান দিলেন। নিজের দ্বিতীয় এবং দলের ২৬তম ওভারের চতুর্থ বলে জামশেদ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বলটি হাতে রাখতে পারেননি একশ সেঞ্চুরির মালিক। ৬৯ রানে জীবন পেলেন জামশেদ। পাকিস্তান ঐ মুহূর্তে ১৫৪ রানে পৌঁঁছে যায় বলটিতে একটি রান নিয়ে। আঙুলে চোট পাওয়ায় মাঠ ছাড়েন শচিন।
জামশেদ ও হাফিজের জুটি
পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ উল হক টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ম্যাচ ওপেন করতে নামলেন বাঁ-হাতি নাসির জামশেদ ও ডানহাতি ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজ। মিসবাহের ব্যাট করার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল তা প্রমাণ করলেন এ দুইজন। ৩৫.৫ ওভারে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ২২৪ রানের। জামশেদ ও হাফিজ দুইজনই সেঞ্চুরি করেছেন। এশিয়া কাপে ২২৪ রানের জুটিটি সর্বোচ্চ, উদ্বোধনী উইকেট ও রানের ক্ষেত্রে। তৃতীয় উইকেটে শোয়েব মালিক ও ইউনুস খানের ২২৩ রানের জুটি ছিল হংকংয়ের বিপক্ষে ২০০৪ সালে। কলোম্বোতে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই জুটি এতদিন এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ ছিল। ওয়ানডে ক্রিকেটে উদ্বোধনী জুটি হিসেবে জামশেদ ও হাফিজের এটি ১১তম। উদ্বোধনীতে সর্বোচ্চ রানের জুটি উপুল থারাঙ্গা ও সনাথ জয়সুরিয়ার (২৮৬)।
আট বোলার
পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি জমে গেলে মহেন্দ্র সিং ধোনি প্রায় সবাইকে দিয়েই চেষ্টা করলেন। বিরাট কোহলি, গৌতম গম্ভীর ও ধোনি নিজে ছাড়া সবাই হাত ঘুরিয়েছেন কাল। আট বোলার দিয়ে চেষ্টা! পাকিস্তানের এই উদ্বোধনী জুটি গিয়ে থেমেছে ২২৪ রানে। এই জুটি ভেঙে দেন পেসার অশোক ডিন্ডা নাসির জামশেদকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে।
রিয়াজের ফেরা
গত বছর মার্চে মোহালিতে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানী পেসার ওয়াহাব রিয়াজ খেলেছিলেন। দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন পাঞ্জাবে জন্ম নেয়া এই বাঁ-হাতি বোলার। ৪৬ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। পাকিস্তান ম্যাচটি হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়। রিয়াজ দলে নিয়মিত হতে পারেননি ইনজুরির কবলে পড়ায়। বিশ্বকাপের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে রিয়াজের পারফরমেন্স হতাশজনক ছিল না। মোহালিতে সেমিফাইনাল খেলার পর তিনি আর মাত্র ছয়টি ওয়ানডে খেলেছেন। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে রিয়াজ ভারতের ম্যাচেই দলে জায়গা করে নিলেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে তিনি আগের (বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার বিপক্ষে) দুই ম্যাচে দলে জায়গা করে নিতে পারেননি। ঠিক ভারতের ম্যাচেই ফিরলেন তিনি।
No comments:
Post a Comment