Saturday, March 17, 2012

সুন্দরী হ্যাকারক্রিস্টিনা সেচিনকায়া

প্রথমে কম্পিউটার, এরপর ইন্টারনেট আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয় এই নির্বাক বুদ্ধিমান যন্ত্রটার সাথে পথচলা। আর সারাদিন তো থাকতে হয় বিভিন্ন প্রযুক্তির সাথে। আর যুগে যুগে প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রযুক্তির ব্যবহার শুধু উপকারিতাই নিয়ে আসেনি, সাথে করে এনেছে কিছু অযাচিত ঝামেলা। যাকে একধরনের নিরাপত্তাহীনতাও বলা যায়। আর এই নিরাপত্তাহীনতার জন্য প্রথমেই দায়ী করা যেতে পারে ইন্টারনেটকে। আরও ভালোভাবে বলতে গেলে, ইন্টারনেটের এই তথ্য ভাণ্ডারের মাঝে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য হ্যাকারদের কারণে নানাভাবে বিপর্যস্ত হতে হয় আমাদের। তবে হ্যাকিংয়ের কিছু ভালো দিকও আছে। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, হ্যাকিং ব্যাপারটা আসলে কী।


হ্যাকিং

যখন একটা সিস্টেম তৈরি করা হয়, চেষ্টা করা হয় যেন সিস্টেমটা খুব মজবুতভাবে দাঁড় করানো যায়। যাতে ভবিষ্যতে কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয়। সেটা শুধু হ্যাকিং বলেই না, সেটা হতে পারে সিস্টেমের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের খাতিরে। আর এখানেই হ্যাকারদের কাজের জায়গাটা তৈরি হয়ে যায়। অর্থাত্, কোনো সিস্টেমের দুর্বল অংশ খুঁজে সেটায় ইনফিলট্রেট (অভ্যন্তরীণ অংশে প্রবেশ) করাই হলো হ্যাকিং। একজন হ্যাকারকে অবশ্যই একজন খুব ভালো ও বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রোগ্রামার হতে হবে। নাহলে হাজার লাইনের প্রোগ্রাম কোড ভেদ করে অ্যাকসেস করা খুব একটা সহজ কাজ নয়।

হ্যাকার

হ্যাকার শব্দটি আমাদের কাছে খুব পরিচিত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সময়ে ইংরেজি সিনেমাগুলোতেও হ্যাকিং নিয়ে বেশ মজাদার গল্প উপস্থাপন করেছেন ডিরেক্টরেরা। তেমনই কিছু জনপ্রিয় সিনেমাগুলোর মধ্যে হল, ‘দ্য হ্যাকার’ (অ্যাঞ্জেলিনা জোলি অভিনীত) এবং ‘সোর্ড ফিস’। এ ছাড়াও প্রায়ই দেখা যায় হ্যাকিং নিয়ে তৈরি হয় সিনেমা। বেশ জনপ্রিয়তাও পায় সেগুলো। তবে, ইন্টারনেটের এই মহাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা হ্যাকার কোনো সিনেমা থেকে উঠে আসা নয়। তারা সত্যিকারের হ্যাকিংয়ের সাথে জড়িত। মজার ব্যাপার হলো তারা বেশিরভাগই তরুণ হ্যাকার। তবে খুব বেশি নজির নেই যে, হ্যাকিং করে কেউ পার পেয়ে গেছেন। কোনো না কোনো সময়ে তাদের ধরা পড়তেই হয়েছে। সে রকমই সেরা কিছু হ্যাকারদের দলে নাম লেখানো একজন হলেন রাশিয়ান সুন্দরী ক্রিস্টিনা সেচিনকায়া। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারী হ্যাকার রাশিয়ার মেয়ে ক্রিস্টিনা সেচিনকায়া আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের আদালতে হাজির হয়েছেন সম্প্রতি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইউরোপের একটি ব্যাংক থেকে ৩৫ হাজার ডলার ইন্টারনেটের মাধ্যমে চুরি করেছেন।

নিউ ইয়র্ক অবজারভার পত্রিকার এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায় যে, হ্যাকার সন্দেহে ধরা পরার পর ক্রিস্টিনাকে একটি হ্যাকার দলের অংশ হিসেবে দোষী করা হয়েছে। তবে, জুরি বোর্ড এখনো নিশ্চিত নয় যে, ক্রিস্টিনা আসলেই একজন সত্যিকারের হ্যাকার কি না! দেখা গিয়েছিল আদালত কক্ষে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে কেঁদেছিলেন। তার সম্পর্কে আরও জানা গেছে, তাকে দুটো আদালতে দুটি ভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে একটি আদালতে বলা হয়েছে যে, ক্রিস্টিনা ব্যাংকের টাকা চুরি করে সাইবার ক্রাইম করেছে। তাও সেটা খুব সামান্য অঙ্কের না, পরিমাণটা একটু বেশিই ছিল। আর অপর আদালতে বলা হয়েছে যে, ক্রিস্টিনা জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন। তবে এই ক্ষেত্রে ভিন্ন দৃষ্টি পোষণ করেছেন অনেকেই। জুরিরা বলছেন, এটাকে হয়তো ঠিক হ্যাকিং বলা যাবে না। এটা হতে পারে ভিন্ন ধরনের অপরাধ। আইনজীবীরা যুক্তি দেখিয়ে বলছেন যে, ক্রিস্টিনাকে একটি হ্যাকিং দলের সদস্য হিসেবে চাকরি দেওয়া হয়েছিল, যে দলে মোট দুই ডজনেরও বেশি হ্যাকার কাজ করে থাকে এবং যারা ভুয়া পাসপোর্ট বানাতে পারে। কিন্তু কোর্টের আঙ্গিনায় ক্রিস্টিনা হ্যাকার হিসেবে প্রমাণিত হোক বা না হোক, তার কার্যক্রম হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জড়িত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সাধারণত দেখা যায়, ছেলেরা প্রোগামিং জগতে বেশি আগ্রহী। কারণ হিসেবে অনেকে বলেন, মেয়েরা প্রোগ্রামিংয়ের মতো কঠিন কাজের সাথে টিকে থাকতে পারে না। আবার সাধারণত দেখা যায় কম্পিউটার বিজ্ঞানে মেয়েরা ততটা ভালো হয় না। মজার একটি হিসাব করতে গেলে দেখা যাবে, এই পৃথিবীর সব বিশাল আবিষ্কার পুরুষদের। আর এসব হাজারো আবিষ্কারের ভিড়ে সেখানে ক্রিস্টিনার মতো মেয়েরা পৃথিবী জয় করবে, ব্যাপারটা সবার নজরে আসবে—সেটাই স্বাভাবিক।

No comments: